ধোনির অভিষেক ম্যাচের ভারতীয় দলের সতীর্থরা আজ কে কোথায়?
ধোনির অভিষেক ম্যাচের ভারতীয় দলের সতীর্থরা আজ কে কোথায়?
করোনা আবহে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ আইপিএল। যেকারণে ধোনির ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে ১৬ বছর আগে স্মৃতির পাতায় ফিরে মাহির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর্বিভাব দিবসের দিন ভারতীয় দলে যারা খেলেছিলেন,তারা আজ কে কোথায়, একনজরে জেনে নেওয়া যাক।
ধোনির অভিষেক
২০০৪ সালে চট্টগ্রামে বাংলাশের বিরুদ্ধে মহেন্দ্র সিং ধোনি দেশের জার্সিতে অভিষেক করেন। এরপর রূপকথার উত্থান। সেই ম্যাচে ধোনি রান আউট হয়েছিলেন।
শেষ ম্যাচেও রান আউট হন ধোনি
কাকতালীয়ভাবে এখনও পর্যন্ত বাইশ গজে শেষ যে ম্যাচটি ধোনি খেলেছেন, বিশ্বকাপে ভারত-নিউজিল্যান্ডের মধ্যে সেটি ম্যাচেও ধোনি রান আউট হয়েছেন।
ধোনি শেষ ম্যাচে খেলে ফেলেছেন, মত ক্রিকেটমহলের
অভিষেক ও শেষ ম্যাচে ধোনির রান আউটের এই মিল খুঁজে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ধরে নিয়ে অনেকেই মতামতের দিক থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভাজিত। এই পরিস্থিতিতে ধোনির অভিষেক ম্যাচে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা আজ কে কোথায় একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধোনির প্রথম অধিনায়ক। সেদিনের ভারত অধিনায়ক আজ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অধিনায়কের পদ আলো করছেন।
বিসিসিআইয়ের রিমোর্ট কন্ট্রোল সৌরভের হাতে
তখন ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের রিমোট কন্ট্রোল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে ছিল। আর এখন ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের পুরো কন্ট্রোলটাই সৌরভের হাতে। ২০০৮ সালে ধোনির অধিনায়কত্বে সৌরভ দেশের হয় ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।
সচিন তেন্ডুলকর
২০০৪ সাল! ভারতীয় ক্রিকেট সচিন মানে তখন এক একটি রূপকথার ইনিংস। ক্রিকেট থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার পর এখন অবসরে সচিন। ২০১৩ সালে কোটি কোটি ক্রিকেট ফ্যানেদের কাঁদিয়ে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়েতে ২০০ তম টেস্ট ম্যাচ খেলে সচিন বাইশ গজকে গুডবাই জানান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে সচিন ৩২ বলে ১৯ রান করেছিলেন।
ব্যাট হাতে সচিনকে দেখতে মুখিয়ে থাকেন ফ্যানরা
বর্তমানে সচিন ক্রিকেট থেকে দূরে থেকেও যেন ক্রিকেটে রয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভয়ংকর দাবানলে পুড়ে যাওয়া বনাঞ্চলের ক্ষতিতে সাহায্যার্থের জন্যে চ্যারিটি ম্যাচে ব্যাট ধরেন সচিন। এরপর মুম্বইয়ে পথ সুরক্ষার সচেতনতায় ক্রিকেট লিগেও ব্যাট ধরেছেন।
যুবরাজ সিংহ
ধোনির অভিষেক ম্যাচে যুবরাজ সিং তিন নম্বরে ব্যাট করেছিলেন। ৩৩ বলে ২১ রানে করেছিলেন বাঁ হাতি। ধোনি-যুবির কেমিস্ট্রি পরে ভারতীয় ক্রিকেটকে অনেক স্মরণীয় পার্টনারশিপ, জয় উপহার দিয়েছে।
অধিনায়ক ধোনি ও ব্যাটসম্যান যুবি জুটির ম্যাজিক
২০০৭ সালের ক্যাপ্টেন ধোনি আর ব্যাটসম্যান যুবির ম্যাজিকে প্রথমবারের জন্য ভারত টি-২০ ক্রিকেটে বিশ্বকাপ জেতে। এরপর একই জুটি ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। ভারতীয় ক্রিকেটে যুবি-ধোনিরা এমন ক্রিকেটার, যারা দুটি বিশ্বকাপ জিতেছেন।
যুবির ক্যানসার
বিশ্বকাপের পর অবশ্য যুবিকে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ক্যানসারে আক্রান্ত হন যুবরাজ। পরে মারণ রোগকে হারিয়ে যুবি ক্রিকেটে ফিরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই ধোনির সঙ্গে জুটিতে ক্রিজে থেকে ১৫০ রানের কেরিয়ার সেরা ওডিআই ইনিংস খেলেছেন। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে জাঁকজমকহীন এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় জানান যুবরাজ।
রাহুল দ্রাবিড়
ভারতীয় ক্রিকেটের দ্য ওয়াল ২০১১ সালে ক্রিকেট ছেড়েছেন। দেশের প্রাক্তন এই অধিনায়ক টেস্ট ও ওডিআই দুই ফর্ম্যাটেই ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে ফ্যানেদর হৃদয়ে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে দ্রাবিড় জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির ক্রিকেট অপারেশনের ডিরেক্টর পদে রয়েছেন।
মহম্মদ কাইফ
কাইফ মানেই সেই ভারত-ইংল্যান্ড ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ ফাইনাল! কঠিন সময়ে নেমে ম্যাচ জেতানো বহু ইনিংস খেলেছেন মহম্মদ কাইফ। ধোনির অভিষেক ম্যাচে জাতীয় দলে কাইফ ছিলেন। মাহির অভিষেক ম্যাচে কাইফ ১১১ বলে ৮০ রান করেছিলেন। ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন এই ডানহাতি। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ধারাভাষ্যকার হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন কাইফ।
শ্রীধরন শ্রীরাম
ধোনির অভিষেক ম্যাচে শ্রীধরন শ্রীরাম ব্যাটে কামাল করতে না পারলেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বল হাতে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। ২০১২ সালে শ্রেণির ক্রিকেট থেকে তিনি অবসর নিয়ে নেন।
অজিত আগারকর
সেই সময়ের পেসারদের মধ্য দুই নাম জাহির-আগারকার। ধোনির অভিষেক ম্যাচে আগারকর খেলেছিলেন। ২০১৩ সালে সব রকমের ক্রিকেট থেকেই অবসর তিনি অবসর নেন।
ইরফান পাঠান
ভারতীয় অলরাউন্ডার ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন।
যোগিন্দর শর্মা
ভারতীয় ক্রিকেটে যোগিন্দর শর্মার নাম বললেই ২০০৭ সালের টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা মনে পড়বে। সেই ম্যাচে ফাইনাল ওভারে পাকিস্তানের তৎকালীন অধিনায়ক মিসবা উল হককে আউট করে ভারতকে ম্যাচ জেতান শর্মা। অনেকেই জানেন না ধোনির সঙ্গে একই ম্যাচে যোগিন্দর শর্মার অভিষেক হয়েছিল। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর এখন পুলিশের চাকরিতে রয়েছেন যোগিন্দর।
হরভজন সিংহ
সেই সময়ে ভারতীয় দলের তারকা অফ স্পিনার। দেশের জার্সিতে দুটি বিশ্বকাপ জিতেছেন। ২০০৭ সালের পর ২০১১ সালেও বিশ্বকাপে খেলেন ভাজ্জি। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর এখন ধারাভাষ্যকার ও টিভি প্রেজেন্টার হিসেবে জনপ্রিয় ভাজ্জি।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি
অভিষেকে সেদিন ০ রানে রান আউট হয়েছিলেন ধোনি। ক্রিজে প্রথম বলটি ব্যাট ঠেকিয়ে রান চুরি করতে গিয়ে রান আউট হন। এরপর মাহির রূপকথার উত্থান। ভারতের জার্সিতে পরবর্তীকালে ধোনি বিশ্বের সেরা সেরা ফিনিশার ওঠে উঠেছিলেন।
বাইশ গজে অধিনায়ক ধোনির সাফল্য
ধোনির অধিনায়কত্বে ভারত ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ, ২০১১ সালে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ ও ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে। ধোনিই প্রথম অধিনায়ক যিনি আইসিসির এই তিন ট্রফি জিতেছেন। অন্য অধিনায়কদের এই তিন ট্রফি জেতার সুনাম নেই।
'তিরিশেই নাকি বুড়ো'! নির্বাচকদের কোন ইঙ্গিত ইরফান পাঠান ও সুরেশ রায়নার