২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এঁরাই কি ভারতের ভবিষ্যৎ
হাতে এখনও অনেকটা সময়। এর মধ্যেই নিজেদের পরিণত করে নিন ভারতের প্রতিভাশালী ক্রিকেটাররা। তাহলেই লাভবান হবে দেশ, লাভবান হবেন আপনারাও।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে সুযোগ পেলেই পারফরমেন্স করেন। ব্যাটিং-বোলিং- ফিল্ডিংয়ে মান কারোর চেয়ে কম নয়। তবুও মেন ইন ব্লু-র তারকা ক্রিকেটারদের ঠেলে সবসময় প্রথম একাদশে জায়গা নিশ্চিত নয়। অজিঙ্ক রাহানে থেকে যজুবেন্দ্র চাহাল সকলেরই এক কাহিনি। এটাকে নেগেটিভ নয়, পজিটিভ বিষয় হিসেবেই দেখছেন টিম ইন্ডিয়ার সদস্যরা। পজিটিভ বিষয় হিসেবে দেখে থিঙ্কট্যাঙ্কও। আসলে দলে এত প্রতিভা যে বেঞ্চে বসে থাকা ক্রিকেটারদের দিয়েও একটা প্রথম একাদশ হাসতে হাসতে নামিয়ে দেওয়া যায়।
এরকইম পাঁচ ক্রিকেটার যাঁরা যদি নিজেদের সামাণ্য টিউন করে নিয়ে অধ্যাবসায় জারি রাখেন তাহলে ২০১৯ বিশ্বকাপে ভারতকে আটকানো বেশ মুশকিল। এই পর্বে প্রথমেই আসে লোকেশ রাহুলের নাম। তরুণ এই ক্রিকেটার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ১৭ টি টেস্টেই ৪ টি শতরান করে ফেলেছেন। সর্বোচ্চ রান ১৯৯। একদিনের ক্রিকেটে এখনও অবধি ৬ টি মাত্র ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে তারমধ্যে রয়েছে একটি শতরান ও একটি অর্ধশতরান। শুধু দেশের মাটিতেই নয় বিদেশের মাটিতেও একইরমক সাবলীল কে এল রাহুল। তবে সমস্যা একটা রয়েছে। ক্লাসিক টাচের অধিকারী এই ব্যাটসম্যান ভীষণভাবেই চোটপ্রবণ।ফলে বারাবর দল থেকে বাদ পড়ে যান তিনি। ২০১৯ বিশ্বকাপ মাথায় রেখে নিজের এই চোটপ্রবণতা কাটিয়ে উঠতে হবে লোকেশ রাহুলকে। তিনিই হয়ে উঠতে পারেন বিশ্বকাপে ভারতের টেক্কা।
টেস্টে গড় ৪৬.০৭। পরিসংখ্যানটা নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ অজিঙ্ক রাহানের । একদিনের দলে হাসতে হাসতে তাঁর আসা উচিত। ৭৩টি একদিনের ম্যাচ খেললেও এখনও কিন্তু একদিনের দলে প্রথম একাদশে নিয়মিত হতে পারেননি। ২০১৯ আসতে এখনও অনেকটা সময় হাতে। সময়ের নদী অনেকটা পেরিয়ে যাবে। কে থাকবেন , কে থাকবেন না তাতেও থাকবে অনেকটা বদল। সেই কথা মাথায় রেখেই নিজেকে তৈরি করতে হবে তাঁকে। ধোনির মতে রাহানে টপঅর্ডারের চমৎকার ব্যাটসম্যান। এমনকি আইপিএলেও টপ অর্ডারেই খেলেন এই তরুণ। এই মুহূর্তে প্রথম একাদশে ঢোকার লড়াইতে তাঁর প্রতিপক্ষ যুবরাজ সিং। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিনি একটি ম্যাচেও জায়গা পাননি। তবে এতে ভেঙে পড়লে চলবে না। পারফরমেন্স দিয়ে চালিয়ে যেতে হবে প্রথম একাদশে ঢোকার লড়াই।
অনুর্ধ্ব ১৯-র জার্সি গায়ে জ্বলে উঠেছেন। ধোনির পর ধামাকা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে নাম যদি কারো সামনে এসে থাকে সেটা তরুণ ঋষভ পন্থের। এবারের আইপিএলে ১৪ টি ম্যাচে ৩৬৬ রান ঝোলায় পুড়েছেন তিনি। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি স্কোয়াডে তাঁকে নির্বাচকরা রাখেননি। কিন্তু এতে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। ন্যাচারাল ব্যাটসম্যানের তকমা পান তিনি। ধোনির উত্তরসূরি হিসেবে তাঁকেই ভাবছে ক্রিকেট মহল। এই মোটিভেশন নিয়েই ফোকাসে ২০১৯ বিশ্বকাপ।
ব্যাট হাতে ঝকঝকে পারফরমেন্স। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সি গায়ে একের পর এক ধামাকা পারফরমেন্স মনীশ পান্ডের। কিন্তু এখনও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাত্র ১২টি একদিনের ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে তাঁর। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিকে ছিঁড়লেও চোটের কারণে ছিটকে যেতে হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১০৪ রানের ইনিংস রীতিমতো প্রশংসা কেড়েছিল। পাশাপাশি ম্যাচ ফিনিশার হিসেবেও তিনি সফল। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সি গায়ে বহু ম্যাচে সাফল্যের সঙ্গে এই ভূমিকা তিনি পালন করেছেন। ভবিষ্যতে জাতীয় দলেও তাঁকে এই ভূমিকাতেই পেতে চায় ক্রিকেট মহল।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে যজুবেন্দ্র চাহালেরও খুব বেশি সংখ্যক ম্যাচ খেলা নেই। কিন্তু তাতে কী। রয়্যাল চালেঞ্জার্সের জার্সি গায়ে সফল টি-টোয়েন্টি বোলারের তকমা পেয়ে গেছেন এই লেগ স্পিনার। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে ২৫ রানে ৬ উইকেট পাওয়ার পরও একদিনের দলে সুযোগ বিশেষ হয়নি। খেলেছেন শুধুমাত্র জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ৩টি একদিনের ম্যাচে। অশ্বিন ভারতীয় দলের সম্পদ। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে যজুবেন্দ্রকে তৈরি করা উচিত ক্রিকেট মহলের।