সাতাশির স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন মহম্মদ শামি; দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে নিলেন বিশ্বকাপে হ্যাট্রিক
একটুর জন্যে বেঁচে গেল বিরাট কোহলির ভারত।
একটুর জন্যে বেঁচে গেল বিরাট কোহলির ভারত। সাউদাম্পটনে শনিবার ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল আফগানিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানকে হেলায় হারানোর পরে পয়েন্টস টেবিলের সবচেয়ে নিচে থাকা আফগানদের কোহলিরা অনায়াসে হারাবেন, এমন আশাই করেছিলেন আপামর সমর্থকরা। কিন্তু সেই খেলাতেই ভারতকে প্রায় কোনঠাসা করেও শেষ পর্যন্ত মাত্র ১১ রানে পরাজিত হল আফগানিস্তান।
এদিনের ম্যাচে ভারতের বোলাররা নজরকাড়া সাফল্য পেলেও ইতিহাস তৈরি করলেন পেসার মহম্মদ শামি। চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলেন তিনি এদিনই, আহত ভুবনেশ্বর কুমারের জায়গায় দলে এসে। আর এসেই নিলেন একটি দুর্দান্ত হ্যাট্রিক। আফগানিস্তানের ব্যাটিং-এর পঞ্চাশতম ওভারে গুলবাদিন নায়েব-এর দলের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। প্রথম বলে চার খেলেও তৃতীয় চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পরপর তিনটি উইকেট তুলে নেন ভারতীয় পেসার। তাঁর প্রথম শিকার ফর্মে থাকা মহম্মদ নবি যিনি ৫২ রান করেন। ফের বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে। আর তারপরের দু'টি বলে আফতাব আলম এবং মুজিব উর রহমানকে বোল্ড করেন শামি।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে শামি দশম বোলার যিনি হ্যাট্রিক নিলেন
বিশ্বকাপের ইতিহাসে শামি দশম বোলার হিসেবে হ্যাট্রিক করলেন। ভারতীয় হিসেবে তিনি দ্বিতীয়। এর আগে ১৯৮৭ সালে নাগপুরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্ৰুপ ম্যাচে চেতন শর্মা হ্যাট্রিক নেন। সেই ম্যাচে কেন রাদারফোর্ড, ইয়ান স্মিথ এবং ইভান চ্যাটফিল্ডকে পর পর তিন বলে বোল্ড করে ম্যাচ ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দেন চেতন। অবশ্য সেই ম্যাচের আরেকটি বড় রেকর্ড ছিল সুনীল গাভাস্কারের ঝোড়ো শতরান যা ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর একমাত্র তিন অঙ্কের স্কোর। নয় উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে হারায় ভারত এবং ম্যান অফ দ্য পুরস্কার পান পান চেতন এবং গাভাস্কার দু'জনেই। এদিন অবশ্য হ্যাট্রিক করে শামি ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হননি; সেই পুরস্কার দেওয়া হয় জসপ্রীত বুমরাহকে।
পাকিস্তানের একজন হ্যাট্রিক করেছেন
সব মিলিয়ে, বিশ্বকাপের আসরে শামির আগে নয় জন বোলার এই কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। সাতাশিতে চেতনের পরে ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের সাকলাইন মুস্তাক হ্যাট্রিক নেন জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে।
লাসিথ মালিঙ্গা বিশ্বকাপে দু'টি হ্যাট্রিক করেছেন
এরপর, ২০০৩-এর বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভাস বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এবং অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লি কেনিয়ার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন। ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কারই লাসিথ মালিঙ্গা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে 'স্প্লিট' হ্যাটট্রিক করেন। মালিঙ্গা ২০১১-র বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিরুদ্ধে ফের আরেকটি হ্যাটট্রিক করেন। এগারোতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কেমার রোচ-ও একটি হ্যাট্রিক করেন, নেদারল্যান্ডস-এর বিপক্ষে।
দু'হাজার পনেরোর বিশ্বকাপেও দু'টি হ্যাট্রিক হয়। একটি নেন ইংল্যান্ডের পেসার স্টিভেন ফিন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এবং অপরটি দক্ষিণ আফ্রিকার জে পি ডুমিনি, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার-ফাইনালে।