তবে কি পাকাপাকি ছুটিতে ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক? বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ ধোনিকে ঘিরে প্রশ্ন!
ভারতের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৯ সালের ৯ জুলাই। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সেই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হয় ভারতকে। ধোনি-জাদেজার আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত বৈতরণী পার করতে পারেনি ভারত।
ভারতের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৯ সালের ৯ জুলাই। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সেই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হয় ভারতকে। ধোনি-জাদেজার আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত বৈতরণী পার করতে পারেনি ভারত। সেই থেকেই প্রশ্নটা আরও জোরালো হয়। তবে কী শেষ হয়ে গেলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফিনিশার? তবে বারবার সমালোচকদের ব্যাটে জবাব দিয়ে আসা মহেন্দ্র সিং ধোনি বিশ্বকাপের পর আর জবাব দিলেন না। তাঁর মাঠে নামা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। সেই জল্পনা আরও তীব্র হল আজ।
বোর্ডের চুক্তিতে নেই ধোনি!
২০১৯-এর অক্টোবর থেকে ২০২০-র সেপ্টম্বর পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বার্ষিক চুক্তির তালিকা প্রকাশ করে আজ। এবং ২০০৫-এর পর এই প্রথমবার বোর্ডের কন্ট্র্যাক্টের তালিকা থেকে বাদ পড়লেন ধোনি। আর এর সঙ্গেই আবার প্রশ্ন উঠল যে তবে কী ধোনির কেরিয়ার কী শেষ?
দীর্ঘ ছুটি
২০১৯-এর বিশ্বকাপের পর একের পর এক সিরিজে নিজেকে খেলা থেকে দূরে রেখেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথমে দুই মাস কাশ্মীরে সেনা শিবিরে থাকার জন্যে ছুটি নিলেও পরবর্তীতে সেই ছুটি অনন্তকালের জন্যে চলতে থাকে। এবং এখনও সেই ছুটি চলছে। তবে এই ছুটি চির বিদায়ে পরিণত হবে কী না তাই নিয়ে ধোনিকে প্রশ্ন করা ছাড়াও ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উড়ে গিয়েছে বোর্ড কর্তাদের দিকে।
ঋষভেই ভরসা বোর্ডের?
অনেকেই মনে করেছিলেন যে বিশ্বকাপের পরই ধোনি অবশর ঘোষণা করতে পারেন। তবে তা না হওয়ায় সবার মনে হয় যে ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেই ধোনি ক্রিকেটকে বিদায় জানাবে। তবে ভারতীয় দলে ততদিনেআবির্ভাব ঘটেছে ঋষভ পন্থের। টেস্টে বিদেশের মাটিতে দুর্দান্ত কিছু পারফর্ম্যান্সের জোরে ধোনির বিকল্প হিসাবে তাঁকে দেখা শুরু করে ভারতীয় ক্রিকেট মহল। পাশাপাশি ধোনির সেই আগের মতো চালিয়ে খালের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় মারমুখি ঋষভকেই টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের উপযুক্ত বলে গণ্য করতে থাকেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
চুক্তিতে পদন্নোতি ঋষভের
এদিকে ধোনির পরবর্তী ভারতীয় উকেটরক্ষক হিসাবে উঠে আসা ঋষভ সদ্য প্রকাশিত কন্ট্র্যাক্টের তালিকায় এ ক্যাটাগোরিতে উঠে এসেছেন। সম্প্রতিক কালে কয়েকটি ছাড়া খুব একটা ভালো কোনও পারফ্রম্যান্স না থাকা সত্ত্বেও এ ক্যাটাগোরিতে ঋষভের পদোন্নতিতে প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে। যে তবে কী ধোনির সঙ্গে বোর্ড কর্তাদের কথা হয়ে গিয়েছে। তবে ধোনির অবসর কবে? তিনি কি আদেও কোনও দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজের অবসর ঘোষণা করবেন?
গুজব প্রসঙ্গে কী বলেছিলেন সৌরভ?
ধোনি এর আগে অবসরের গুজব আকারে ইঙ্গিতে উড়িয়ে দিয়েছেন একাধিকবার। আজকের আগে পর্যন্ত জাতীয় দলের ধোনির প্রত্যাবর্তন নিয়ে প্রতিদিনই গুজব ভেসে বেড়াচ্ছিল প্রতিদিন। এই নিয়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে বছরের শুরুতেই তিনি বলেন, 'ধোনি দলের অধিনায়ককে নিজের পরিকল্পনা জানিয়েছে আগেই। আমি নিশ্চিত ধোনি নির্বাচকদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছেন। এই মঞ্চ এই বিষয়ে আলোচনা করার নয়। ধোনি কী করবে, সেটা একান্তই ওঁর সিদ্ধান্ত। ধোনি একজন চ্যাম্পিয়ন। ভারতীয় ক্রিকেটের আল্টিমেট চ্যাম্পিয়ন থেকে যাবে ধোনি।'
এখনও আশায় ধোনি ফ্যানরা
এদিকে ধোনি ফ্যানরা এখনও আশায় বুক বাঁধছেন। কারণ আইপিএলঃএ ধোনি যদি ভালো খেলেন সেই ক্ষেত্রে আবারও জাতীয় দলে ধোনিকে ফেরানো নিয়ে প্রশ্ন জোরালো হবে। তবে বিষয়টি হল বর্তমান পরিস্থিতিতে কী নির্বাচকরা ধোনিকে দলে নিচ্ছেন না, না কি ধোনি স্ব ইচ্ছায় মাঠ থেকে দূরে রয়েছেন? এই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
আক্ষেপ নিয়েই ক্রিকেটকে বিদায় মাহির?
চার দিন আগেই নিজের শেষ খেলা ম্যাচ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের শেষ দুই ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩১ রান। ৪৯ তম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন ধোনি। দ্বিতীয় বলে কোনও রান পাননি। তৃতীয় বল মেরে স্বভাবসিদ্ধ ভাবে মাহি ছুটলেন দুই রান নিতে। কিন্তু, মাত্র ১ ইঞ্চির জন্য রান আউট হয়ে ফিরতে হয় ২০১১-র বিশ্বকাপে জয়ের কাণ্ডারীকে। সেই বিষয়ে ধোনি বলেছিলেন, 'প্রথম ম্যাচে রান আউট হয়েছিলাম। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও রান আউট হই। মনে মনে এখনও নিজেকে বলি, কেন যে সেদিন ডাইভটা দিলাম না? সেদিন হয়তো আমার ডাইভ দেওয়াটাই ঠিক ছিল।' এখন প্রশ্ন সেই আক্ষেপ নিয়েই ভারতীয় ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ট ও সফলতম অধিনায়ক?