বিশ্বকাপে কতটা লড়াই দিতে তৈরি মিশর, জেনে নিন
বিশ্বকাপের জন্য ২৩ জনের দল ঘোষণা করেছে মিশর। বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত দলে একাধিক চমক রেখেছে মিশরের টিম ম্যানেজমেন্ট। দলে রাখা হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে চোট পাওয়া সালাহকে।
কয়েক দিন আগে পর্যন্ত গৃহযুদ্ধ ছিল যেই দেশের নিত্যসঙ্গী, সেই মিশরই এখন বিশ্বকাপের আলোচনায়। পিরামিডের দেশ হিসেবে পরিচিত মিশরের অন্যতম আকর্ষণ ঐতিহ্যশালী নীল নদ। কিন্তু গৃহযুদ্ধ এবং ক্ষমতার পট পরিবর্তনে রক্তাক্ত হয়েছে নীলনদের পার্শ্ববর্তী দেশ।
যতই রাজনৈতিক চাপান-উতোর থাক, মিশরে ফুটবল এখন একটা ধর্ম! যা জাতি বিদ্বেষ এরং বর্ণ বিদ্বেষের উপরে স্থান পেয়েছে।
আর এমনটা হবে নাই বা কেন! কারণ দীর্ঘ ২৮ বছর পর ফুটবল বিশ্বকাপে অংশ নিতে চলেছে মিশর। আর এই উন্মাদনাই এখন উৎসবের পরিচয়।
মিশরের ফুটবলে মূল অস্ত্র অ্যটাকিং ফুটবলের সঙ্গে সঙ্গে রক্ষণাত্মক ছক। কিন্তু বিশ্বকাপের এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপের মূল পর্বে কোনও ম্যাচ জিততে পারেনি মিশর। কিন্তু সেই রেকর্ড বদলাতে পারে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে। কারণ সালাহ এমনই একজন প্লেয়ার যে নিজের গুণে ম্যাচ বেড় করার ক্ষমতা রাখেন, ঠিক যেমনটা করে থাকেন লিওনেল মেসি বা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। তাই এই বিশ্বকাপে সালাহ-এর কারণেই বেশ কিছুটা মিশরকে এগিয়ে রাখছেন বিশেষজ্ঞরা।
সালাহর উপর নির্ভরতা বেশি বেড়ে গেলে সেটা ক্ষতি ডেকে আনবে মিশরেরই। কারণ অন্যন্য দলগুলির তখন একটাই লক্ষ হবে সালাহকে আটকে দেওয়া। আর সালাহ আটকে গেলে বিপদ বাড়বে মিশরের। এই পরিস্থিতিতে মিশরের মিডফিল্ডে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে আবদাল্লা সইদ এবং মহম্মদ আলনেনিকে। কারণ মিশরের মাঝমাঠের অন্যতম দুই স্তম্ভ এই দুই মিডিও।
মাঝমাঠ আর আক্রমণ যদি নিজেদের কাজ ঠিক মতো করতে পারে তাহলে বিশ্বকাপে চমকপ্রদ ফল করতে পারে মিশর। কারণ হেক্টর কুপারের কোচিংয়ে বেশ শক্তিশালী ডিফেন্স তৈরি করেছে মিশর। নিজেদের শেষ ৩২টি ম্যাচে মাত্র ২টি গোল হজম করেছে তারা। ফলে বিশ্বকাপে মিশরের সাফল্যের রসদ অনেকটাই ঢুকে রয়েছ মাঝমাঠ এবং ফরওয়ার্ড লাইনের উপর।
এই বিশ্বকাপে মিশরের পারফরম্যান্স অনেকটাই নির্ভর করবে মূলত তিন ফুটবলারের উপর। তাঁরা হলেন ইসাম আল হাদারি, মহম্মদ আলনেনি এবং মহম্মদ সালাহ।
ইসাম আল হাদারি: ১৯৯৬ সালে মিশরের সিনিয়র দলে অভিষেক হয় ইসামের। প্রথম দিন থেকে আজও মিশরের জাতীয় দলে গোলদূর্গের তলায় শেষ কথা তিনিই। স্রেফ তাঁরা বিশ্বস্ত হাতের উপর রক্ষা করে বহু হারা ম্যাচ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরেছে মিশর। মিশরের এই বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক তিনি। পাশাপাশি দলের সব থেকে অভিজ্ঞ প্লেয়ারও ইসাম। বিশ্বকাপে তিন কাঠির তলায় ইসাম যদি ফের দুর্ভেদ্য হয়ে ওঠে তাহলে মিশরের কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
মহম্মদ আলনেনি: প্রিমিয়ার লিগের আর্সেনাল এবং ওয়েস্ট হ্যামের ম্যাচে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় মহম্মদকে। আর্সেনালের পাশাপাশি তাঁর চোট চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল মিশরেরও। কারণ আলনেনি-ই রাশিয়া বিশ্বকাপে মিশরের মাঝমাঠকে সচল রাখার মূল কাজটা করবেন। যদিও সেই চোট নিয়ে বেশি ভুগতে হয়নি তাঁকে।
মহম্মদ সালাহ: আলনেনির মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পাওয়া সালাহের চোটও চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল মিশরের। তবে, বিশ্বকাপে খেলার মতো ধীরে ধীরে ফিট হয়ে উঠছেন সালাহ। লিভারপুলের জার্সিতে প্রথম মরসুমে ৩২টি গোল করে নজর কেড়েছেন এই তারকা। মনে করা হচ্ছে সালাহের পায়ের উপরই নির্ভর করবে মিশরের বিশ্বকাপ ভাগ্য। ৯ জুন জাতীয় দলের সতীর্থদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা সালাহর। তাঁর ৯৫ মিনিটে করা পেনাল্টি গোলই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করতে সাহায্য করে মিশরকে।
বিশ্বকাপে
মিশরেরে
ম্যাচ:
মিশর
বনাম
উরুগুয়ে,
১৫
জুন
২০১৮
মিশর
বনাম
রাশিয়া,
১৯
জুন
২০১৮
মিশর
বনাম
সৌদি
আরব,
২৫
জুন
২০১৮
এক ঝলকে দেখে নিন ২০১৮ ফিফা ওর্য়াল্ড কাপের জন্য বাছা মিশরের দলে কারা সুযোগ পেলেন।
গোলরক্ষক:
ইসাম
আল
হাদারি,
মহম্মদ
আল-শিনাউই,
শেরিফ
আক্রামি
ডিফেন্ডার: আহমেদ ফাথি, সাদ সমীর, আয়মান আশরফ, মাহমুদ হামদি, মহম্মদ আব্দুল-শাফি, আহমেদ হিগাজি, আলি গাবর, আহমেদ ইলমহম্মাদি, ওমর গাবর
মিডফিল্ডার:
তারিক
হামেদ,
শিকাবালা,
আবদাল্লা
সইদ,
স্যাম
মরসি,
মহম্মদ
আলনেনি,
মাহমুদ
খারাবা,
রামাদান
সোভি,
মহমুদ
হাসান,
ওমর
ওয়ার্দা
ফরওয়ার্ড: মারওয়ান মহসেন, মহম্মদ সালাহ