এশিয়া কাপ ২০১৮, ফাইনালে জিততেই পারে বাংলাদেশ - জেনে নিন ৩ কারণ
বাংলাদেশ কেন এশিয়া কাপ ২০১৮ ফাইনাল, ভারত বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ জিততে পারে তার ৩টি কারণ।
প্রথম থেকেই এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি কেউ। ক্রিকেট বিশ্বে সবাই ধরেই নিয়েছিলেন ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল হবে। কিন্তু সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিয়েছে ডার্ক হর্স বাংলাদেশ। আবুদাবিতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পাকিস্তানকে ছিটকে গিয়ে জায়গা করে নিয়েছে ফাইনালে।
সেই ম্যাচে একেবারে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে ফিরে আসে তারা। একইভাবে বল করতে গিয়েও যখন যখনই পাকিস্তানের একটি বড় পার্টনারশিপ গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তখনই উিকেট তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশি বোলাররা। বাংলাদেশের কোলেয়াড়রা তাদের লড়াকু চরিত্রটা স্পষ্ট করে দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: এশিয়া কাপ ২০১৮, ফাইনালে কারা হতে পারেন নায়ক - চোখ রাখুন এই ক্রিকেটারদের দিকে]
তবে ফাইনালে তাদের সামনে বাধাটা পাহাড়প্রমাণ। এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ক্রিকেট শক্তি ভারত। আর এই টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত পারফরম্যান্সের নিরিখেও ভারতের ধারেকাছে কেউ নেই। কিন্তু তাই বলে ভারত মাঠে নামবে, আর ড্যাং ড্যাং করতে করতে কাপ নিয়ে চলে যাবে - এমন ভাবাটা কিন্তু বোকামি হবে। কয়েকটি কারণে ২০১৮ এশিয়া কাপ কিন্তু ঘরে তুলতে পারে বাংলাদেশও।
ব্যাটিং গভীরতা
তামিম ইকবাল এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যাওয়া পর থেকে বাংলাদেশের টপ অর্ডার এশিয়া কাপে বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে। ওপেনার লিটন দাস একটি ম্যাচ ছাড়া রান পাননি। নাজমুল হোসেন শান্ত, মোমিনুল হক, সৌম্য সরকার এখনও পর্যন্ত সবাই রয়েছেন ব্যর্থের তালিকায়। কিন্তু ম্যাচের পর ম্যাচ কিন্তু টপ অর্ডারের এই দুর্বলতাকে ঢেকে দিয়েছে বাংলাদেশের মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডার।
মুশফিকুর রহিম এই মুহূর্তে ফর্মের শীর্ষে রয়েছেন। একটি শতরান নিয়ে টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত ২৯৭ রান তুলেছেন তিনি। মাহমুদুল্লা করেছেন ১৫২ রান, মিঠুন ১৩৫রান। বাংলাদেশি অধিনায়ক মাশরাফে মোর্তাজারও ১৭০০-র উপর একদিনের ক্রিকেটে রান রয়েছে। তিনিও কিন্তু শেষে নেমে ৪-৬ মারতে পারেন। পাকিস্তান শুরুর কয়েকটি উইকেট তুলে চাপটা আলগা করে দিয়েছিল। ভারতের কিন্তু এই ভুল করা চলবে না।
ফিজ ফ্যাক্টর
বাংলাদেশ বোলিংয়ের প্রধান শক্তি, সমর্থকদের নয়নের মণি, 'কাটার মাস্টার' মুস্তাফিজুর রহমান। মাঝে তার ফর্ম পড়তির দিকে ছিল, যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাংলাদেশের টিম ম্য়ানেজমেন্ট থেকে ফ্যানরা। তবে তিনি যাবতীয় চোট, যাবতীয় বাধা কাটিয়ে ধীারে ধীরে ফের ফর্মে ফিরেছেন। টুর্নামেন্টে তিনি আপাতত ৮ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। ৩২ ওভার বল করে দিয়েছেন ১৪৭ রান। তাঁর সঙ্গে থাকবেন স্পিনার মেহিদি হাসান। যিনি বেশি উইকেট তুলতে না পারলেও মাঝের ওভারগুলোয় রান তোলার গতি থমকে দিয়েছেন। টুর্নামেন্টে তাঁর ইকোনমি রেট ৩.২৭।
মাশরাফের নেতৃত্ব
ফিল্ডিং হোক কী বোলিং, মাশরাফের নিবেদিত প্রাণ উপস্থিতিই বাংলাদেশের বাকি ১০ খেলোয়াড়ের কাছে অনুপ্রেরণার। তার সঙ্গে জুড়তে হবে তাঁর নেতৃত্বের দক্ষতা। ফিল্ডিং সাজানো থেকে বোলিং পরিবর্তন, মাশরাফে একেবারে নিখুঁত।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটাই ধরা যাক। তিনি বোলিং আক্রমণ শুরু করেছিলেন মেহিদি হাসানকে দিয়ে। তিনি তুলে নেন ফখর জামানকে। আবার যখন ইমামুল হক ও আসিফ আলি জুটি বেঁধে পাকিস্তানকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, আবার স্পিনারদের বল করতে ডাকেন মাশরাফে। মেহিদি নেন আসিফ আলির উইকেট, মাহমুদুল্লা তুলে নেন ইমামুলকে। আবার সাকিবের অনুপস্থিতিতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দশ ওভার করিয়ে নিয়েছিলেন অনিয়মিত বোলারদের দিয়েই। তাঁর ক্ষুরধার নেতৃত্ব এদিনের ম্যাচে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে।