আইসিসি নাক গলাতে চায় আইপিএল-এ! বাকি সদস্যদের সঙ্গে সংঘাতের মুখে ভারতীয় বোর্ড
আইসিসি সকল চালু ও আসন্ন বেসরকারি টি২০ লিগগুলিকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি অনুমোদনকারী গোষ্ঠী স্থাপন করতে চায়। কিন্তু, বিসিসিআই তা মানতে রাজি নয়।
এবার আইপিএল-এও নাক গলাতে চাইল আইসিসি। জানা গিয়েছে শুধু আইপিএল নয়, ক্রিকেট বিশ্বে ইতিমধ্যেই চালু থাকা ও আগামী দিনের বেসরকারি টি২০ ক্রিকেট লিগগুলিকে নির্দিষ্ট নীতি ও নিয়মে বেঁধে ফেলতে চাইছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। তবে আইপিএল ভারতের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা, তাই এতে নাক গলানো যাবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড।
সম্প্রতি দুবাইয়ে আইসিসির বৈঠকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন আইসিসির চিফ অপারেটিং অফিসার ইয়ান হিগিন্স ও মিডিয়া সত্ত্বের প্রধান আরতী সিং দাবাস। জানা গিয়েছে, তাঁরা সারা বিশ্ব-জুড়ে চলা বেসরকারি ক্রিকেট লিগ গুলিকে পর্যবেক্ষনের জন্য একটি পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী নিয়োগ করার কথা বলেছেন। সবকটি লিগ কে আইসিসির প্রণিত একটি নির্দিষ্ট নীতির আওতায় আনতে চেয়েছেন।
কি করবে এই পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী?
এই পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর কাজ হবে - ১. সারা বিশ্ব জুড়ে ক্রমে বাড়তে থাকা টি২০ লিগগুলিতে আরও নিয়ন্ত্রণ আনা, ২. কী ভাবে লিগগুলি পরিচালিত হবে তার জন্য একটি নির্দিষ্ট নীতি গঠনে সহায়তা করা, ৩. এছাড়া, লিগের ফর্ম্যাট ও খেলোয়াড়দের নীতি গঠনে তাঁদের ভূমিকা থাকবে, ৪. এইভাবে ধীরে ধীরে লিগগুলির উপর আইসিসির নিয়ন্ত্রণ আনবে তারা।
বিসিসিআই-এর জবাব
বিসিসিআই সরাসরি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ যেরকম আইসিসির এক্তিয়ারবুক্ত নয়, তেমন আইপিএল-কে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকারও তাদের নেই। এতে আপাতত আইসিসি-কে ঠেকানো গিয়েছে বলেই খবর রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্টইন্ডিজ কী বলছে?
ভারতের আইপিএল-এর মতো ক্রিকেট বিশ্বে অন্যতম জনপ্রিয় বেসরকারি টি২০ লিগ চালু রয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্টইন্ডিজে। ভারত আইসিসির নাক গলানোর বিরোধিতা করলেও এই দুই দেশ কিন্তু মুখে কুলুপ এঁটেই ছিল। সম্প্রতি বিগ ব্যাশ থেকে এক ক্রিকেটার বেশি অর্থের প্রস্তাব পেয়ে মরসুমেই মাঝেই দল ছেড়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের এক দলে যোগ দিয়েছেন। তারপর তারা একটি নির্দিষ্ট নীতির সমর্থনেই যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতের জন্য অশনি সঙ্কেত
আপাতত আইসিসি-কে ভারত ঠেকাতে পারলেও আগামী দিনে তা সম্ভব হবে কি না তাই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ আইসিসি-তে কোনও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় সদস্যদের ভোটাভুটি-তে। সাম্প্রতিক সময়ে অধিকাংশ আইসিসি সদস্য দেশই বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। যেহেতু বিসিসিআই-এর বিভিন্ন পদস্থ কর্তাদের যে কোনও সিদ্ধান্তের জন্য সিওএ-র উপর নির্ভর করতে হয়, তাই তারা অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ক্রিকেট বিশ্ব তাই এই সময়েই আইসিসি-তে ভারতীয় বোর্ডের প্রাধান্য কমাতে চাইছে।
হঠাত কেন এই উদ্যোগ?
শিল্প মহল মনে করছে আইসিসি-র এই উদ্যোগের পিছনে আসল কারণ আইপিএল-এর বিপুল বানিজ্য। দুই মাসের আইপিএল থেকে যা রেভিনিউ উঠে মাসে তা সারা ক্রিকেট বিশ্ব থেকেও তুলতে পারে না আইসিসিয বিশ্লেষকদের মতে, আইপিএল-ই এখন ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড। তাই তার অংশ হতে চাইছে তারা। শিল্প মহলের দাবি টি২০ লিগগুলির বেনিয়ম বন্ধ করার অন্য অনেক উপায় রয়েছে।