৮-০ এর স্ট্রিক, তবে কি টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পথ মসৃণ টিম কোহলির!
৮-০ এর স্ট্রিক, তবে কি টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পথ মসৃণ টিম কোহলির!
৮-০ এর স্ট্রিক! হ্যাঁ, টি-২০ ক্রিকেটে টানা আট ম্যাচে অপরাজেয় কোহলির ভারত। ঘরের মাঠে মুম্বই থেকে শুরু। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস থ্রিলার সিরিজের শেষ ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের হারিয়ে মুম্বই ম্যাচ জিতেছিল ভারত। এরপর ২০২০ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২টি টি-২০ জয়। নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে টানা ৫-০! সব মিলিয়ে ভারতের স্ট্রিক এখন ৮-০! তবে কি টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পথ মসৃণ টিম কোহলির!
আইসিসির শেষ তিন টুর্নামেন্টে ভারতের পারফর্ম্যান্স
বছর ভারত যেমনই খেলুক না কেন, আইসিসির টুর্নামেন্টের বড় মঞ্চে বারেবারেই ফেল করে মেন ইন ব্লু। তাই পথ মসৃণ সত্যিই কি এমনটা বলা যায়।
২০১৯ বিশ্বকাপ, ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপ, আইসিসির শেষ তিন টুর্নামেন্টে স্বপ্ন তৈরি করেও ভারতের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। শেষ তিন আইসিসি টুর্নামেন্টে শুরুটা ভালো করলেও শেষে এসে এক ধাক্কায় টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে কোহলিরা। অধিনায়ক বিরাটের কথায় যা আধ ঘন্টার খারাপ ব্যাটিংয়ে কারণেই ইংল্যান্ডের মাটিতে ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে ভারত। বছর ভর আশা জাগালেও বারেবারেই আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারত তীরে এসে ডুবেছে।
২০১৯ বিশ্বকাপ
ইংল্যান্ডের মাটিতে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ গ্রুপ পর্বে ৯ ম্যাচের মধ্যে একটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। বাকি ৮ ম্যাচের মধ্যে ৭টিতে জয়, ১টি হার। লিগ পর্বে ৯ ম্যাচ থেকে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ভারত ১ নম্বরে শেষ করেছিল। তবে সেমিফাইনালে, কিউয়িদের বিরুদ্ধে রোহিত, বিরাট ও রাহুল, টপ অর্ডারের তিন মহারথীই ১ রান করে ফেরেন। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৮ রানে ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল ভারতীয় দল।
২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল
২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একইভাবে হার। সেখানও রোহিত ,বিরাট ও ধাওয়ান ১ রান করে ফেরেন। মিডল অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় সেবার ফাইনালেও ম্যাচ হারতে হয়েছিল।
২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপ
সেবার ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে হার। ১৯৩ রান তাড়া করতে নেমে সেমিফাইনালে সিমন্স ঝড়ের সামনে ভারত ম্যাচ হেরে বসে।
মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা
২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতের ট্রফির ভাঁড়ার শূন্য। তবে গলদ কোথায়?
খোঁজ দিতে বসলে প্রথম উত্তর সেমিফাইনাল বা ফাইনালের মঞ্চে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা। ২০১৯ বিশ্বকাপই ধরা যাক। চার নম্বর নিয়ে বিরাটদের প্রচুর মাথাব্যথা। কখনও রাহুল, কখনও পন্থ, কখনও বিজয় শংকর। চার নম্বরে বিশ্বকাপের আগে অম্বাতি রায়ডুও খেলেছেন। কিন্তু এরপরও বিশ্বকাপে পাকা চার নম্বর তৈরি করতে না পারায় মিডল অর্ডার নিয়ে নাকানি-চোবানি খেতে হয়েছিল। অথচ নির্ভরযোগ্য অজিঙ্ককে ব্যবহারই করতে চাইলেন না বিরাট!
এখন অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টেছে। শ্রেয়স আইয়ার চারে দুর্দান্ত খেলছেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে টি-২০ বিশ্বকাপে শ্রেয়স চার, পাঁচে রাহুল ও ছয় মনীশ নামবেন।
বড় মঞ্চে বিরাট-রোহিত ফেল করলে হাল ধরবে কে?
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখুন, বা ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচ। দুই ক্ষেত্রেই বিরাট ও রোহিত ১ রান করে ছিলেন। যারপর দল আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।
টি-২০ বিশ্বকাপের বছর ২০২০ সালে অবশ্য ছবিটা পাল্টেছে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের সিরিজটাই ধরা যাক। সিরিজের পাঁচ ম্যাচে বিরাট একটিও ৫০ করেননি।তারপরেও পাঁচ ম্যাচেই ভারতের জয়।
রোহিত এক ম্যাচ বিশ্রামে। পঞ্চম ম্যাচে ৬০ করেন। তৃতীয় ম্যাচে ৬৫। বাকি তিন ম্যাচে কিন্তু রোহিতের ব্যাটের দিকে না তাকিয়েই ম্যাচ জিতেছে ভারত।
শক্তিশালী বোলিং
কেন এবারের বিশ্বকাপে ফেভারিট ভারত। উত্তর লুকিয়ে বোলিংয়ে। ভারতের বোলিং লাইন আপ এখন বিশ্বের এক নম্বর। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শামি-বুমরাহরা আগুন ঝড়ানোর ক্ষমতা রাখেন। সঙ্গী হবেন বুদ্ধিমান দীপক চাহার, শার্দুল ঠাকুর ও অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমার।
আর রয়েছে ওয়ান্ডার বয় নভদীপ সাইনি। অজিদের ডেরায় সঠিক জায়গায় ইর্য়কারগুলো রাখতে পারলে ভারত কিন্তু এগিয়ে থাকবে। এই পেস আক্রমণের সঙ্গে চোট সারিয়ে হার্দিক ফিরলে অলরাউন্ডার হিসেবে দলে ঢুকবেন। এই সব কারণে এবার বড় মঞ্চে বিরাটের নতুন এই ভারতীয় দল নিয়ে অনেক আশা। সেক্ষেত্রে শেষ তিনবারের মতো নার্ভ ফেল না করলে এবার কিন্তু ট্রফি হারানোর কোনও কারণ নেই।