কলকাতার বুকে পুনের মেয়ের কীর্তি! ১৫৯ দিনের রোমাঞ্চকর যাত্রায় টেক্কা দিলেন এশিয়ার সবাইকে
কলকাতায় এসে বেদাঙ্গী কুলকার্নি সাইকেলে বিশ্বভ্রমণ সম্পূর্ণ করলেন। এই কীর্তি স্থাপনে তিনি হলেন এশিয়ার মধ্য়ে দ্রুততম।
২৯,০০০ কিলোমিটার পেরিয়ে রবিবার (২৩ ডিসেম্বর) 'সিটি অব জয়' কলকাতায় এসে পৌঁছল বেদাঙ্গী কুলকার্নির সাইকেলের চাকা। ১৫৯ দিনে সাইকেলে বিশ্বপরিক্রমার একেবারে শেষ পর্যায়ে কলকাতায় এলেন পুনের এই ২০ বছরের মহিলা। এবার কলকাতা থেকে ফের অস্ট্রেলিয়ার পার্থ-এ ফেরার পালা। সেখান থেকেই তো শুরু হয়েছিল যাত্রা। পৌঁছলেই সম্পূর্ণ হবে বৃত্ত।
প্রতিদিন ৩০০ কিলোমিটার করে সাইকেল চালিয়ে ১৪টি দেশ ঘুরে ফেলেছেন। চলতি বছরেই ইংল্যান্ডের সাইক্লিস্ট জেনি গ্রাহাম সাইকেলে বিশ্বপরিক্রমা করায় দ্রুততমা হয়েছেন। তিনি সময় নিয়েছেন ১২৪ দিন। বেদাঙ্গী অত দ্রুত না করতে পারলেও তিনিই এশিয়ার কোনও মহিলা বা পুরুষের থেকে সাইকেলে দ্রুত বিশ্ব পরিক্রমা করে রেকর্ড করেছেন।
কে এই বেদাঙ্গী?
আদে পুনের বাসিন্দা হলেও, ইউনাইটেড কিংডমের বোর্নমাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্রী বেদাঙ্গী। স্পোর্টস ম্য়ানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। সাইকেলে বিশ্বপরিক্রমার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন বছর দুয়েক আগে। তাঁর এই যাত্রার যাবতীয় খরচের সিংহভাগ জুগিয়েছেন তাঁর বাবা-মা।
যাত্রাপথের বাধা
নানা রকম বাধা বিপদের সম্মুখিন হতে হয়েছে বেদাঙ্গীকে। কখনও কানাডায় ভল্লুক তাড়া করেছে। কখনও রাশিয়ায় বরফে ঢাকা প্রান্তরে একাকী ক্যাম্পে রাত কাটাতে হয়েছে। আবার কখনও স্পেনে তাঁকে ছুরি দেখিয়ে লুঠ করেছে দুষ্কৃতিরা। এসবের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে ভিসা পেতেও সমস্য়ায় পড়েছেন এই ভারতীয় মহিলা। তিনি জানিয়েছেন, এই ধরণের অনভিপ্রেত সমস্যার মুখে না পড়লে বিশ্বপরিক্রমার সময়টা আরও উন্নত হত।
যাত্রার সঙ্গী
এই
দীর্ঘ
যাত্রার
৮০
শতাংশ
পথে
বেদাঙ্গীর
সঙ্গী
ছিলেন
শুদুমাত্র
তাঁর
বাইসাইকেল।
এই
বিশেষ
অভিযানের
জন্য
তিনি
বিশেষভাবে
এক
সাইকেল
তৈরি
করিয়ে
নিয়েছিলেন।
সাইকেলের
যন্ত্রপাতি,
তাঁবুর
সরঞ্জাম,
জামাকাপড়
মিলিয়ে
সাইকেলের
উপর
ভারটাও
কম
থাকত
না।
তাই
নিয়েই
দিনের
পর
দিন
একা
একা
প্যাডেল
করে
গিয়েছেন
বেদাঙ্গী।
যাত্রা শুরু
বেগাঙ্গী যাত্রা শুরু করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহর থেকে। সেখান থেকে সাইকেলে পৌঁছান ব্রিসবেনে। ব্রিসবেন থেকে বিমানে অকল্যান্ডে পৌঁছে, নিউজিল্যান্ডের উত্তর থেকে একেবারে দক্ষিণ পর্যন্ত চলে গিয়েছিলেন সাইকেল নিয়ে।
পূর্বমুখী যাত্রা
এরপর অল্প সময়ের ফ্লাইটে তিনি পৌঁছান পশ্চিম কানাজডার ভাঙ্কুভারে। সেখান থেকে শুরু হয়েছিল তাঁর পূর্বমুখী যাত্রা। আমেরিকা মহাদেশ থেকে গিয়েছেন ইউরোপে। সাইকেল চালিয়ে পর্তুগাল, স্পেন ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফিনল্যান্ড পেরিয়ে পৌঁছান রাশিয়ায়। রাশিয়া ভ্রমণের পরও তাঁর বিশ্বপরিক্রমার যোগ্যতা অর্জনে ৪০০০ কিলোমিটার বাকি ছিল। যা তিনি পূর্ণ করলেন ভারতে উড়ে এসে। সম্পূর্ণ যাত্রা পথে তাঁকে -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।