সৌরভ-দ্রাবিড়ের সান্নিধ্যেই ধোনির শ্রেষ্ঠত্ব, মত টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ম্যানেজারের
সৌরভ-দ্রাবিড়ের সংমিশ্রণেই ধোনির শ্রেষ্ঠত্ব, মত টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ম্যানেজারের
কিংবদন্তি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন গ্রেট মহেন্দ্র সিং ধোনি। রাহুল দ্রাবিড়ের অধিনায়কত্বও কাছ থেকে দেখেছেন মাহি। দেশের দুই প্রাক্তন অধিনায়কের সান্নিধ্য ধোনির নেতৃত্ব দানের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করেছে বলে মনে করেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ম্যানেজার লালচাঁদ রাজপুতের। ঠিক কী বলেছেন তিনি, জেনে নেওয়া যাক।
সৌরভ-দ্রাবিড়ের গুন পেয়েছেন ধোনি
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী যে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, তার ম্যানেজার ছিলেন লালচাঁদ রাজপুত। ধোনিকে কাছ থেকে দেখার সৌজন্যে রাজপুত বিশ্বাস করেন, কিংবদন্তি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং রাহুল দ্রাবিড়ের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন মাহি। দেশের দুই প্রাক্তন তথা দক্ষ অধিনায়কের সান্নিধ্য ধোনিকে শ্রেষ্ঠ নেতা বানিয়েছে বলে মনে করেন রাজপুত।
আগ্রাসী সৌরভ ও হিমশীতল দ্রাবিড়
২০০০-এর ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জর্জরিত অন্ধকারাচ্ছন্ন ভারতীয় ক্রিকেটকে আলোয় ফিরিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মাঠে তাঁর আগ্রাসনই ছিল নতুন টিম ইন্ডিয়ার শক্তি। অন্যদিকে দেশের অধিনায়ক হিসেবে রাহুল দ্রাবিড় ততটা সফল না হলেও, তাঁর হিমশীতল মানসিকতাকে কুর্নিশ করে ক্রিকেট বিশ্ব। এই দুই মানসিকতার মিশ্রণ এমএস ধোনির অধিনায়কত্বে দেখতে পাওয়া যায় বলে মনে করেন লালচাঁদ রাজপুত। তাঁর কথায়, ভারতীয় দলের মনোভাব পরিবর্তন করেছিলেন সৌরভ। ক্রিকেটারদের মনে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিলেন মহারাজ। ধোনি শ্রেষ্ঠ হলেও বিসিসিআই সভাপতির যোগ্য উত্তরসূরি বলে দাবি টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ম্যানেজারের।
অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
২০০০ সালে ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডে যখন জর্জরিত ভারতীয় ক্রিকেট, তখন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল অনভিজ্ঞ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে। ভারতীয় ক্রিকেটে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছিল। টিম ইন্ডিয়াকে ১৪৬টি ওয়ান ডে-তে নেতৃত্ব দিয়েছেন মহারাজ। ৭৬টি ম্যাচ জিতেছে ভারত। ৬৫টি ম্যাচে হার হজম করতে হয়েছে। অন্যদিকে সৌরভের নেতৃত্বে ৪৯টি টেস্ট খেলে ২১টি ম্যাচ জিতেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। তার মধ্যে ১১টি জয় এসেছে বিদেশের মাটিতে। অধিনায়ক হিসেবে দেশকে ২০০২-র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ঐতিহাসিক ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি উপহার দিয়েছেন মহারাজ। তরুণ টিম ইন্ডিয়াকে ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েও দুর্ধর্ষ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হার হজম করতে হয়েছিল। সেই অস্ট্রেলিয়াকেই তাদের মাটিতে টেস্ট সিরিজ ড্র করিয়েছিল সৌরভ ব্রিগেড।
অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে গড়া যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, জাহির খান, আশীষ নেহরা, বীরেন্দ্র শেহওয়াগ সম্বৃদ্ধ এক শক্তিশালী ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তিনি নিজেও মহারাজের হাতে গড়া বললে ভুল হবে না। সেই সঙ্গে মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর, গৌতম গম্ভীরের মতো ক্রিকেটারদের পেয়ে ২০১১-র ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জিতেছিলেন মাহি। দেশকে ২০০৭-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৩-র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও তুলে দিয়েছেন এমএস। যদিও তাঁরই নেতৃত্বে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাদেরই মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইট ওয়াশ হতে হয়েছিল ভারতকে। তুলনামূলক বেশিদিন দেশের অধিনায়ক থাকা ধোনি ৬০টির মধ্যে ভারতীয় দলকে ২৭টি টেস্ট ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন। অন্যদিকে এমএস-র নেতৃত্বে ১৯৯টি ওয়ান ডে-র মধ্যে ১১০টিতে জিতেছে ভারত। ৭২টি টি-টোয়েন্টির মধ্যে ৪১টি ম্যাচে দেশকে জয় উপহার দিয়েছেন মাহি।