সাল ১৯৯৭, সচিনের অধিনায়কত্বেই কেরিয়ার শেষ হতে বসেছিল সৌরভের, কিন্তু কেন?
জানেন কী সচিনের অধিনায়কত্বে কেরিয়ার শেষ হতে চলেছিল সৌরভের, কিন্তু কেন?
১৯৯৭ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই কিংবদন্তি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্রিকেট কেরিয়ার নাকি শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের সেই সময়ের অধিনায়ক তথা মাস্টার ব্লাস্টার সচিন তেন্ডুলকর। ম্যাচ হারের চরম হতাশা এবং রাগে বড় বাবুকে পাঁচ কথা শুনিয়েও দিয়েছিলেন ছোট বাবু। ঠিক কী ঘটেছিল, জেনে নেওয়া যাক।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কেরিয়ার
ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে ৩১১ ওয়ান ডে-তে ১১৩৬৩ রান করেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দেশের হয়ে ২২টি আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে শতরান রয়েছে তাঁর। অন্যদিকে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে ১১৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ৭২১২ রান করেছেন সৌরভ। তাতে সামিল রয়েছে ১৬টি শতরান (একটি দ্বিশতরান)। এহেন ক্রিকেটার তথা বন্ধু সৌরভের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার নাকি শুরুতেই শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন কিংবদন্তি সচিন।
ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১৯৯৭ সালে সচিন তেন্ডুলকরের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ফলে হেরেছিল ভারত। চার ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজও ৩-১ ফলে জিতে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বার্বাডোস টেস্ট
টসে জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত। প্রথম ইনিংসে ২৯৮ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৩৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন শিবনারিন চন্দ্রপল। ভারতের হয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন ভেঙ্কটেশ প্রসাদ। জবাবে প্রথম ইনিংসে ৩১৯ রান করেছিল ভারত। সর্বোচ্চ ৯২ রান করেছিলেন অধিনায়ক সচিন তেন্ডুলকর। ৭৮ রান করেছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪০ রানের বেশি তুলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেছিলেন ব্রায়ান লারা। ভারতের হয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন পেসার আবেয় কুরুভিল্লা। চতুর্থ ইনিংসে ১২০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৮১-তেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ভারত। ওপেনার ভিভিএস লক্ষ্মণ (১৯) ছাড়া ভারতের কোনও ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘর সেদিন টপকাতে পারেননি। ৩৮ রানে ম্যাচে হেরেছিল সচিন তেন্ডুলকর শিবির।
ম্যাচের পর
বার্বাডোস টেস্ট হারের পর হতাশ অধিনায়ক সচিন তেন্ডুলকর ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের ওপর চোটপাট শুরু করেছিলেন। এমনকী নেতা হিসেবে নিজের দক্ষতা নিয়েও তিনি সেদিন প্রশ্ন তুলেছিলেন। ভারতীয় দলে সদ্য সুযোগ পাওয়া সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তখন নাকি অধিনায়ক সচিন তেন্ডুলকরকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। পাল্টা হিসেবে মাস্টার ব্লাস্টার নাকি মহারাজকে পরের দিনের উড়ানে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। তেমনটা সত্যি হলে সেদিনই শেষ হতে পারত দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেট অধিনায়কের কেরিয়ার।
সৌরভের জেদ
বন্ধু সচিন তেন্ডুলকরের কথা কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। এরপর মহারাজ নিজের শারীরিক সক্ষমতা এবং দক্ষতা আরও বাড়ানোর জন্য কড়া পরিশ্রম শুরু করেন বলে শোনা যায়। বাকি তো ইতিহাস। সচিন তেন্ডুলকর ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ওপেনিং জুটি এখনও বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ছোটবাবু এবং বড়বাবুর মধ্যে বোঝাপড়াও দুর্দান্ত।