ফুচকা বিক্রি করে, তাবুতে শুয়ে রাত কেটেছে ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলে ডাক পাওয়া যশশ্বীর
বয়স মাত্র ১৭। এত কম সময়েই অনেক কিছু দেখে ফেলেছে ছেলেটি। মুখোমুখি হয়েছে কঠিন পৃথিবীর কড়া বাস্তবের। তবু লড়াই করতে ভয় পায়নি সে।
বয়স মাত্র ১৭। এত কম সময়েই অনেক কিছু দেখে ফেলেছে ছেলেটি। মুখোমুখি হয়েছে কঠিন পৃথিবীর কড়া বাস্তবের। তবু লড়াই করতে ভয় পায়নি সে। অদম্য সাহস ও মনোবলে ভর করে ২০২০ অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ভারতীয় ক্রিকেট দলে জায়গা করে নিয়েছে বিস্ময় বালক যশশ্বী জয়সওয়াল। যার মধ্যে ভবিষ্যতের নক্ষত্রকে দেখছে দেশের ক্রিকেট মহল।
এই গল্প যে কোনও হিন্দি সিনেমার চিত্রনাট্যকে হার মানাবে। কিংবা তার গল্প নিয়েই তৈরি হতে পারে কোনও নতুন বায়োপিক। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাত্র ১১ বছর বয়সে একা বাণিজ্যনগরী মুম্বই চলে আসে যশশ্বী জয়সওয়াল। থাকবে কোথায়, খাবেই বা কী, সে সবের ধারণা তখন যে তার হয়নি। তবে অচিরেই কড়া বাস্তবের মুখোমুখি হয়েছিল ছোট্ট শিশুটি। ক্ষিদের জ্বালায় দোর থেকে দোরে ঠোক্কর খেয়ে অবশেষে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই-র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল যশশ্বী।
'তবু ক্রিকেটার হব। আর মুম্বইতে থেকেই ক্রিকেট খেলব', এই জেদ নিয়ে জীবন যুদ্ধ শুরু করে যশ্বশী। ন্যূনতম জীবনধারণ ও পেট পালনের জন্য ফুচকা এবং ফল বিক্রি করতে শুরু করে সে। রাতে মুম্বই-র মুসলিম ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাবের মাঠের পাশে তাবু খাটিয়ে শুয়ে রাত কাটাতে শুরু করে যশশ্বী। ভোর হতে মাঠের পাশে গিয়ে বসে পড়ত ওই খুদে। এভাবেই একদিন স্থানীয় কোচের নজরে পড়ে যায় যশশ্বী। শুরু হয় ক্রিকেট প্র্যাকটিস। ১১ বছরের যশশ্বী 'এ' ক্যাটাগরির বোলারদেরও তুলে তুলে ছক্কা হাঁকাতে শুরু করে।
দিনে অনুশীলন এবং রাতে ফুচকা বিক্রি করেই চলতে কেটে যায় সময়। কখনও কখনও যশশ্বীর ক্রিকেট অনুশীলনের পার্টনাররাও তার কাছে ফুচকা খেতে চলে আসত। প্রথম প্রথম তাতে অপ্রস্তুতে পড়ে যেতে ওই খুদে। কিন্তু ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন তার সব লজ্জা দূর করে দিয়েছিল বলে জানিয়েছে যশশ্বী জয়সওয়াল।
২০১৫ সালে মুম্বই-র জাইলস শিল্ড ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ম্যাচে ৩১৯ রান করে প্রথম নজরে আসে যশশ্বী। ওই ম্যাচে বল হাতেও সফল হয় এই কিশোর। ধীরে ধীরে নিজেকে আরও পরিণত করে ফেলে যশশ্বী। ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে এশিয়া কাপে ঝকঝকে পারফরম্যান্স করে সে। বিজয় হাজারে ট্রফিতে মুম্বই-র হয়ে ১১২.৮০-র গড়ে ৫৬৪ রান করে যশশ্বী। একটি ম্যাচে দ্বিশতরানও (২০৩) রয়েছে তার। মাত্র ৯টি লিস্ট এ ও ১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে প্রচারের আলোয় চলে আসা যশশ্বী অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে কেমন খেলে, সে দিকে তাকিয়ে দেশ।