ম্যাচ ফিক্সিং কী করে হয় জানেন? জেনে নিন একজন বুকির ভাষ্য
নয়াদিল্লি, ২৫ মে : এবছর আইপিএলের শুরুতেই বেটিং ও ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারির উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় এবার প্রথম থেকেই সতর্ক পদক্ষেপ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। বস্তুত গত কয়েকবছর ধরেই এই নিয়ে গোপনে একটি ইউনিট কাজ করে চলেছে। ফলে ম্যাচ গড়াপেটা নিয়ে বহু উল্লেখযোগ্য তথ্য ইডি আধিকারিকদের হাতে উঠে এসেছে।
আধিকারিকরা বলছেন, বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বেটিং ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ে লেনদেন হয় বিশ্বজুড়ে। এবং প্রশাসনের কড়া নজর থাকলেও এখনও পর্যন্ত বেটিংকে থামানোর কোনও প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি। এত টাকার লেনদেনের লোভ সামলাতে না পেরেই বুকিরা এতে জড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
ওয়ানইন্ডিয়ার তরফে এক বুকির সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। সে এই সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য বলতে রাজি হয়। তবে শর্ত একটাই ছিল, তার নাম গোপন রাখতে হবে। আসুন দেখে নেওয়া যাক, বেটিং নিয়ে ঠিক কী বলছে ওই বুকি।
বুকির দাবি, যতদিন ক্রিকেট থাকবে, ততদিন বেটিং ও ম্যাচ গড়াপেটা থাকবে। কারণ ওই একটাই, এত কোটি টাকার লেনদেন।
বুকির দাবি, যতদিন ক্রিকেট থাকবে, ততদিন বেটিং ও ম্যাচ গড়াপেটা থাকবে।
এখনকার দিনে সাধারণভাবে গোটা ম্যাচ গড়াপেটা হয় না। সম্পূর্ণ ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করা এখন কঠিন হয়ে গিয়েছে। বদলে ম্যাচের সেশন ধরে ধরে গড়াপেটা করাটাই এখন ট্রেন্ড। কারণ গোটা ম্যাচ গড়াপেটা করতে গেলে পুরো টিমকে বা ম্যানেজমেন্টকে জড়িয়ে নিতে হয়। যা এখনকার দিনে করা খুব কঠিন। এতে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তার বদলে টিমের ১-২ জনকে ধরেই গড়াপেটা করা হয়।
পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত হয় দুবাই থেকে
ম্যাচ গড়াপেটার প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত হয় দুবাই থেকে। ধরুন দিল্লি আর কলকাতায় দুটি আলাদা আলাদা দল কাজ করে। এক্ষেত্রে দিল্লি আর কলকাতার দলের মধ্যে কোনও সম্পর্ক থাকে না। তাদের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে যোগাযোগ রাখা হয় দুবাই থেকে। এভাবে গোটাটাই দুবাইয়ের 'টিম' নিয়ন্ত্রণ করে।
পুলিশের মতে, গোটা বিষয়টাই অত্যন্ত জটিল। কারণ ভারতে বেটিং নিষিদ্ধ হলেও কিছু দেশে তাতে আইনের ছাড় আছে। ফলে অপরাধীরা সেই দেশগুলি থেকে গোটা প্রক্রিয়াটিকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা রোধ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়।
এখনকার ট্রেন্ড হল ছোট ফর্ম্যাটের খেলাগুলিকে 'ফিক্স' করা
এখনকার ট্রেন্ড হল ছোট ফর্ম্যাটের খেলাগুলিকে 'ফিক্স' করা। আর এক্ষেত্রে 'স্পট ফিক্সিং'-ই বুকিদের কাছে 'হট ফেভারিট'। টি-২০ বা পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচকেই সাধারণভাবে বেছে নেওয়া হয়। টেস্ট ম্যাচে সাধারণত ফিক্সিং হয় না। হলেও ম্যাচের কোনওকটি সেশনকে বেছে নেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, এখনও গোটা প্রক্রিয়াতেই হাওয়ালা নেটওয়ার্কে মাধ্যমেই টাকা লেনদেন হয়। এক্ষেত্রে দিল্লিতেই হাওয়ালার টাকার ৮০ শতাংশ আসে। যেভাবে টাকা ভারতে ঢোকে, ঠিক সেই পথেই তা দেশের বাইরে দুবাইয়ে চলে যায়।