অলিম্পিকে খেলা হতে পারে ক্রিকেট! পথের কাঁটা একগুঁয়ে বিসিসিআই, আইসিসি দিল ব্যবসার টোপ
অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলা চালু হওয়ার পথে একমাত্র কাঁটা বিসিসিআই। তারা ন্যাশনাল অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি (নাডা)-র আওতায় আসতে অস্বীকার করেছে।
নিঃসন্দেহে ভারতীয় উপমহাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় ক্রিকেট। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা তো ছিলই, পরে এসেছে বাংলাদেশ, এখন হুড়মুড়িয়ে উঠে আসছে আফগানিস্তানও। কিন্তা তার বাইরে? বহির্বিশ্বে ক্রিকেট সেভাবে পাত্তাই পায় না। না ইউরোপ না আমেরিকা। এমনকী এশিয়ার চীন, জাপান - যারা অন্যান্য ক্রীড়ায় অনেক এগিয়ে আছে, তারাও ক্রিকেটকে পাত্তা দেয় না। আসলে অলিম্পিকে খেলা হয় না যে!
আগে অলিম্পিক বা তার মতো মাল্টি ইভেন্ট ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলোতে ক্রিকেট খেলার প্রধান বাধা ছিল সময়। লম্বা সময়ের খেলা মাল্টি ইভেন্ট ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চালানো সম্ভব ছিল না। কিন্তু এখন এসে গিয়েছে টি২০। অলিম্পিকে তা খেলা যেতে পারে। এশিয়া কাপ ২০১৪-তে ক্রিকেট খেলাও হয়েছিল। কিন্তু এবার তা আবার বাদ পড়েছে।
ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করতে অলিম্পিক, এশিয়া কাপের মতো ইভেন্টে ক্রিকেট চালু করা ছাড়া উপায় যে নেই তা বুঝে গিয়েছে আইসিসি। তাদের সামনে সুযোগও আছে ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করার। কিন্তু বাধ সাধছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
অলিম্পিকে অংশ নিতে গেলে ওয়াডা অর্থাত ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সির আওতায় আসতেই হবে প্রত্যেকটি দলকে। ভারতীয় ক্রিকেট দলকে ন্যাশনাল অ্যান্টি ডোপিং সংস্থা বা নাডা, বহুদিন ধরে তাদের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা গোঁ ধরে বসে আছে কিছুতেই ক্রিকেটারদের নাডার আওতায় আনতে দেবে না।
তাদের যুক্তি যেহেতু তারা ভারত সরকারের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নেয় না, তাই তারা সরকারি সংস্থার করায়ত্ব হবে না। বিসিসিআই এই কথাও বলেছিল যে তারা কোনও সরকারি সংস্থা নয়। ক্রিকেটাররা ভারতের হয়ে খেলেন না, খেলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের হয়ে।
ফলে আইসিসি পড়েছে বিপাকে। ওয়াডার নিয়ম না মানলে ক্রিকেটকে অলিম্পিক বা এশিয়া কাপের মতো বড় ইভেন্টে আনা যাবে না। সেসেক্ষেত্রে ঘটবে না ক্রিকেটের প্রসারও। আবার ভারতীয় বোর্ডই তাদের রোজগারের সবচেয়ে বড় খনি। কাজেই তাদের চটাতেও পারছে না।
এই অবস্থায় আইসিসি বিসিসিআই-এর সামনে আরও অর্থের হাতছানি মেলে ধরতে চাইছে। আইসিসি সিইও বেভিড রিচার্ডসন জানিয়েছেন ভারতীয় বোর্ডকে বোঝানো হবে যদি অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তাহলে আরও অনেক বেশি দেশ ক্রিকেটে আগ্রহ দেখাবে। সেক্ষেত্রে আরও বেশি দেশে ছড়াবে ক্রিকেট। তাতে ভারতীয় বোর্ডের রোজগার আরও বাড়বে।
বিশ্বব্যপি এক সার্ভে করে আইসিসি দেখেছে ক্রিকেট ফ্যানদের ৮৭ শতাংশই অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলা হোক, তা চান। তবে অ্যান্টি ডোপিং পলিসিগত সমস্যা ছাড়াও আরও কিছু বিষয়ের সমাধান করতে হবে আইসিসিকে। দেখতে হবে অলিম্পিকে ক্রিকেট খেলা শুরু হলে তাদের নিজস্ব ইভেন্টগুলির গুরুত্ব যেন হারিয়ে না যায়।
ফুটবল যেমন অলিম্পিকে খেলা হলেও, অলিম্পিক ফুটবলে একমাত্র অনুর্ধ ২৩ ফুটবলাররাই অংশ নিতে পারেন। ফলে এখনও ফুটবলের প্রধান আকর্ষণ রয়ে গিয়েছে ফিফা বিশ্বকাপ। এরকম কিছু ব্যবস্থা আইসিসিকেও নিতে হবে।