ফিরে দেখা ২০১৮: এনগিদি থেকে বুমরা - বছরের সেরা ৬ টেস্ট অভিষেক
এক নজরে ফিরে দেখা যাক ২০১৮ সালে সেরা ৬ টেস্ট অভিষেক।
একদিনের ক্রিকেট চালু হয়েছে। তারপর আরও ছোট হয়ে টি২০ ক্রিকেটও চালু হয়েছে। কিন্তু কোনওভাবেই ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণের আকর্ষণ কমেনি। বিশেষ করে ২০১৮ সাল তো টেস্ট ক্রিকেটের জন্য সোনার বছর হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এই বছরে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজক কিছু টেস্ট সিরিজ দেখা গিয়েছে।
গত কয়েক বছরে টি২০ ও ওডিআই ক্রিকেট কিছুটা হলেও কোনঠাসা করে দিয়েছিল টেস্ট ক্রিকেটকে। কিন্তু এই বছর টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছে বেশ কয়েকজন উত্তেজক টেস্ট ক্রিকেটারের। যাঁরা প্রথম থেকেই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের মতোই দলের জয়ে ভূমিকা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। দক্ষতার ঝলকে বহু প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটারের ছুটি করে দিয়েছেন তাঁরা।
বছরের শেষে এরকমই ছয় ক্রিকেটারকে বেছে নিল মাইখেল বেঙ্গলি, যাঁদের দুর্দান্ত টেস্ট অভিষেক ঘটেছে এই বছর।
মানসবল লেক, গান্ডেরবাল
জম্মু ও কাশ্মীরের গান্ডেরবাল জেলায় অবস্থিত এই লেকটি ভারতের সবচেয়ে গভীর লেক। প্রাকৃতিকভাবে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই লেকটিতে প্রচুর পাখিদের আনাগোনা লেগেই থাকে।
এই মানসবল লেককে কাশ্মীর উপত্যকার সবচেয়ে সুন্দর লেক বলে তুলনা করা হয়।
লুঙ্গি এনগিদি - দক্ষিণ আফ্রিকা
বছরের শুরুতেই নতুন দক্ষিণ আফ্রিকান বোলিং প্রতিভা হিসেবে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন এনগিদি। গত জানুয়ারিতে সেঞ্চুরিয়নে টেস্ট ক্যাপ পেয়েই তাকে কাজে লাগিয়েছিলেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধে টেস্টে ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিংকে ১৫১ রানে গুটিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ৪ টেস্টে ১৯.৬৩ গড়ে তিনি ১৫ উইকেট দখল করেছেন। বছরের শুরুতে অবসর নেওয়া মর্নি মর্কেলের জায়গায় ইতিমধ্য়েই তিনি বেশ মানিয়ে নিয়েছেন।
দমদমা লেক, সোহনা
হরিয়ানার গুরগাঁওয়ে অবস্থিত এই লেকটি ব্রিটিশ ভারতে তৈরি হয়েছিল। আরাবল্লি পর্বতে ঘেরা এই লেকটি হরিয়ানার সবচেয়ে বড় লেকগুলির মধ্যে অন্যতম। শীত ও বর্ষার সময়ে জনপ্রিয় পিকনিক স্পট হয়ে ওঠে এটি।
ঋষভ পন্থ - ভারত
ইংল্যান্ড সফরের প্রথম দুই ম্য়াচে দীনেশ কার্তিকের খারাপ ব্য়াটিং প্রদর্শনের পর তৃতীয় টেস্টে অভিষেক হয় ভারতের উইকেটরক্ষক ও আগ্রাসী ব্যাটসম্য়ান ঋষভ পন্থের। সিরিজের পঞ্চম তথা শেষ টেস্টেই ওভালে তিনি শতরান (১১৪) করেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে শতরান করা প্রথম ভারতীয় উইকেটরক্ষক হন তিনিই। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ঘরের মাটে দুবার ৯২ রানে আউট হন তিনি। উইকেটের পিছনে এখনও সেভাবে প্রভাবিত করতে না পারলেও অ্যাডিলেড টেস্টে তিনি ১১টি ক্যাচ নিয়ে বিশ্বরেকর্ড স্পর্শ করেছেন।
গুরুদগমার লেক, সিকিম
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু লেকগুলির মধ্যে অন্যতম এই গুরুদগমার লেক। শীতকালে এটি বরফে ঢেকে যায়। এই লেকটি বৌদ্ধ ও শিখ ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র। বলা হয় গুরু নানক এই লেক দর্শন করেছিলেন।
বেন ফোকস - ইংল্যান্ড
জনি বেয়ারস্টো আহত থাকায় শ্রীলঙ্কা সফরের ইংল্যান্ড দলে সুযোগ পেয়েছিলেন উইকেটরক্ষক ব্য়াটসম্য়ান বেন ফোকস। তিনিও উইকেটরক্ষক ব্য়াটসম্য়ান হলেও ঋষভের মতো আগ্রাসী নন, বরং ধ্রুপদী। গলে তাঁ অভিষেক টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপদের মুখে রুখে দাঁড়িয়ে তিনি অমূল্য ১০৭ (২০২) রান করেন। পরের টেস্টে পাল্লিকেলে-তেও একটি দ্রুত অর্ধশতরান করেছেন।
বেরিজাম লেক, কোড়াইকানাল
তামিলনাড়ুতে অবস্থিত এই লেকটি দক্ষিণ ভারতের অন্যতম সুন্দর লেক। পালানি হিলসের উপরের অংশে এটি অবস্থিত। এই লেকটিও ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল।
পৃথ্বী শ - ভারত
ভারতের নয়াতম ব্য়াটিং সেনসেশন পথ্বী। ইংল্য়ান্ড সফরে শেষ দুই ম্যাচে তিনি ভারতীয় দলে ডাক পেলেও প্রথম একাদশে জায়গা হয়নি। ঘরের মাঠে রাজকোটে ওয়েস্টইন্ডিজের বিরুদ্ধে সুযোগ পেয়েই তাকে দুহাতে লুফে নিয়েছিলেন এই বিস্ময় প্রতিভা। প্রথম ইনিংসেই ১৯টি চার মেরে ১৫৪ বলে ১৩৪ রান করেছিলেন। পরের টেস্টে আরও একটি অর্ধশতরান করেন। চোটের জন্য চলতি অস্ট্রেলিয়া সিরিজে খেলতে না পারলেও নিঃসন্দেহে আগামী দিনে তিনি ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখিয়েছেন তিনি।
সংমো লেক, গ্যাংটক
সংমো লেক বা ছাঙ্গু লেক পূর্ব সিকিমের অবস্থিত। গ্যাংটক থেকে এর দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, একেক ঋতুতে এর জলের রঙ আলাদা আলাদা হয়।
স্য়াম কুরান - ইংল্য়ান্ড
তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সই ইংল্যান্ড বনাম ভারত সিরিজে প্রধঝান তফাত গড়ে দিয়েছিল। এজবাস্টনে অভিষেক টেস্টেই তিনি ২৪ ও ৬৩ রান করেন ও মোট ৫ উইকেট দখল করেছিলেন। ট্রেন্ট ব্রিজে বাদ পড়লেও সাউদাম্পটনেই তিনি দারুণভাবে ফিরে এসেছিলেন। তিনিই সিরিজের সেরা হন। দেশের বাইরে শ্রীলঙ্কার মাটিতেও তিনি সফল হয়েছেন। এখনও অবধি তিনি টেস্টে ৪০০-এর উপর রান করেছেন এবং ১৪টি উইকেট দখল করেছেন।
ভেমবানাড লেক, কেরল
এই লেকটি ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ লেক। এবং একেক জায়গায় এই লেকের আলাদা আলাদা নাম। এই লেকেই বিখ্যাত নৌকা প্রতিযোগিতা 'নেহরু বোট রেস' অনুষ্ঠিত হয়।
জসপ্রিত বুমরা
বুমরার বোলিং অ্যাকশন দেখলে সকলেই তাঁকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের খাতায় ফেলে দেবেন। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর সাফল্য পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলবেনই। এই বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনি টেস্ট ক্যাপ পান। আর তারপর রাতারাতি সাফল্য আসে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে। জোহানেসবার্গ টেস্টেই তিনি জীবনের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট দখল করেন। চোটের জন্য প্রথম দুই টেস্টে না খেললেও ইংল্যান্ডে তৃতীয় টেস্টেই তিনি দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট নেন। এখনও অবধি মাত্র ৮ টেস্ট খেলেই তিনি ৩৯ উইকেট দখল করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা শামি, ইশান্ত, ভুবনেশ্বর, উমেশের সঙ্গে মিলে তিনি ভারতীয় জোরে বোলিংকে অন্যস্তরে নিয়ে গিয়েছেন।
চিলিকা লেক, ওড়িশা
চিলিকা বা চিলকা লেক উপকূল এলাকায় অবস্থিত ভারতের সবচেয়ে বড় উপহ্রদ। শীতকালে এখানে বহু অজানা পরিযায়ী পাখির ভিড় হয়। ওড়িশার অন্যতম সেরা ট্যুরিস্ট স্পট এটি।
হোন্নেমারাদু লেক, সাগর
কর্ণাটকের সাগর জেলায় অবস্থিত এই লেকটি শরবতী নদীর জলে পুষ্ট। স্থানীয় ভাষায় 'হোন্নেমারাদু' শব্দের অর্থ হল 'সোনার লেক'। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এই লেকের ধার থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে অসাধারণ লাগে।
হুসেন সাগর লেক, হায়দ্রাবাদ
১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে হজরত হুসেন শাহ ওয়ালি ৫.৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই লেকটি তৈরি করান। এই লেকটির মাঝে একটি সুবিশাল গৌতম বুদ্ধের মূর্তি বসানো রয়েছে।
চন্দ্র তাল, স্পিতি
হিমাচল প্রদেশের স্পিতিতে চন্দ্র তাল অবস্থিত। বাতাল বা কুঞ্জুম পাস থেকে মে থেকে অক্টোবরের মধ্যে এখানে ঘুরে আসা যায়। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই লেকের কাছাকাছি সূরজ তালও খুব বিখ্যাত একটি জলাধার।