ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি হয়েও জোটেনি খেলরত্ন! একনজরে অবাক করে দেওয়া তালিকা
গত মাসেই ২০২০ রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরস্কারের জন্য ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা নাম প্রস্তাব করে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড৷ ভারত সরকারের যুব কল্যাণ ও ক্রীড়ামন্ত্রকের তরফে বিভিন্ন বিভাগের পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন চাওয়া হয়৷ ১ জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে এই মনোনয়ন চাওয়া হয়েছিল৷ আর সেই রিপোর্ট কার্ডেই উত্তীর্ণ হন ভারতীয় ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক। এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছেন শুধুমাত্র বিরাট কোহলি, সচিন তেন্ডুলকর ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে তালিকায় নেই ভারতীয় ক্রিকেটের বেশিরভাগ কিংবন্দির নামই। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, সেরমই অবাক করা এক তালিকা।
এখন পর্যন্ত তিনজন ক্রিকেটার এই পুরস্কার পেয়েছেন
১৯৯১-৯২ সালে চালু হওয়া ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী নামে এই অ্যাওয়ার্ড সর্বপ্রথম পেয়েছিলেন ভারতের গ্র্যান্ড মাস্টার বিশ্বনাথ আনন্দ। তবে খুব কম ক্রিকেটারই এই পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পেরেছেন। এখন পর্যন্ত সর্বমোট তিনজন ক্রিকেটার এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছন।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
ভারতীয় ক্রিকেটে অনেক অবদান সত্ত্বেও রাজীব গান্ধী খেলরত্ন সম্মান পাননি এমন ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার আগে থাকবেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক তথা বর্তমানে বিসিসিআই সভাপতির পদে থাকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতীয় দলকে বিশ্বকাপ ফাইনালে নিয়ে যাওয়া, বিদেশের মাটিতে একাধইক ঐতিহাসিক টেস্ট জয় সহ অসংখ্যা পালক সৌরভের মুকুটে থাকলেও তাঁর ভাগ্যে এই পুরস্কার জোটেনি।
রাহুল দ্রাবিড়
এই তালিকায় থাকবেন আরও এক প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বর্তমানে ভারতীয় যুব দল ও এনসিএ-র দায়িত্বে থাকা রাহুল দ্রাবিড়। বিশেষজ্ঞদের মতে রাজীব গান্ধী খেলরত্ন সম্মান পাওয়া উচিৎ ছিল দ্রাবিড়েরও। ১৬০টি টেস্ট ম্যাচে ১৩ হাজারের বেশি রান করা দ্রাবিড় সম্প্রতি এক সমীক্ষায় সচিন তেন্ডুলকরের থেকেও বেশি ভোট পেয়ে ভারতের শ্রেষ্ঠ টেস্ট ক্রিকেটার নির্বাচিত হন। অধিনায়ক হিসাবেও দ্রাবিড় ৭৯টি ওডিআইতে ভারতকে ৪২টি জয় এনে দেন। তবে নিজের ভাগ্যের শিঁকে ছেড়েনি তাঁর।
অনিল কুম্বলে
বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বোলার তথা ভারতীয় টেস্ট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক অনিল কুম্বলেও রয়েছেন এই তালিকায়। টেস্ট ক্রিকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির জীবনে একাধিক সম্মান জুটলেও রাজীব গান্ধী খেল রত্ন পুরস্কার জোটেনি। দীর্ঘ দিন ভারতীয় বোলিংকে একা কাঁধে সামলেও দেশের সর্বোচ্চ খেলার সম্মান তাঁর অধরাই থেকে যায়।
বীরেন্দর সেহওয়াগ
বীরেন্দর সেহওয়াগের ভাগ্যেও এই পুরস্কার জোটেনি। বিশ্ব ক্রিকেটে দুটি টেস্ট ট্রিপল সেঞ্চুরির মালিকের এলিট লিস্টে থাকা সেহওয়াগ নিঃসন্দেহে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার। গান গাইতে গাইতে তাঁর বোলারদের বধ সবার স্মৃতিতে আজও রয়েছে। অকুতোভয় ভাবে খেলে যাওয়া এই ওপেনার ২০১১ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম কাণ্ডারী ছিলেন। তবে এতকিছুর পরও খেল রত্ন পুরস্কারটি তিনি পাননি।
যুবরাজ সিং
যুবরাজ সিং না থাকলে হয়ত ধোনির ক্যাপ্টেন কুল হওয়া হত না। যেই দুটি বিশ্বকাপ ধোনির অধিনায়কত্বে ভারত জিতেছে সেই দুটিতেই যুবরাজের অবদান অনস্বীকার্য। ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬ ছক্কা সহ সেই হাফ সেঞ্চুরির জন্য ভারতটি অনায়াসে ম্যাচটি জেতে। সেই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালেই অস্ট্রেলিয়া দেখে যুবরাজের রণংদেহী মূর্তি। পরে ২০১১ বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে ভারতকে ফাইনালে তোলেন যুবি। তবে বিশ্বকাপ সেরা হওয়া এই ক্রিকেটার পাননি খেল রত্ন পুরস্কার।
কপিল-গাভসকর
এছাড়া কপিল দেব, রবি শাস্ত্রী, বিষণ সিং বেদী, সুনীল গাভসকরের মতো ক্রিকেটাররা এই পুরস্কার থেকে বঞ্চিত থেকেছেন, কারণ, এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ১৯৯১-৯২ মরশুম থেকে। তত দিনে এই কিংবদন্তিরা নিজেদের বুট ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।