এশিয়ান কাপ: ১১ ম্যাচ, গোল ৮! কারা ছিলেন গোলদাতা, জেনে নিন টুর্নামেন্টে ভারতের ইতিহাস
এশিয়ান কাপের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ভারতের হয়ে গোল করেছেন কারা, জেনে নিন।
শনিবার (৫ জানুয়ারি), থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে শুরু হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট এএফসি এশিয়ান কাপ ২০১৯। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনেই গ্রুপ এ-এর ম্যাচে থাইল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ভারত। এই নিয়ে ১৯৬৪, ১৯৮৪ ও ২০১১ সালের পর চতুর্থবার এশিয় ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াইয়ের মূলপর্বে উঠেছে ভারত।
গত শতাব্দীর ছয়ের দশকেও ভারত ছিল এশিয়ায় অন্যতম বড় ফুটবল-শক্তি। ১৯৬৪-এর এশিয়ান কাপে রানার আপ হওয়ার ফলেই তা প্রমাণিত। তবে তারপর থেকে এই প্রতিযোগিতা কিন্তু ভারত কোনওদিনই হেভিওয়েটদের মধ্যে থাকেনি। তবে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে ভারতের হয়ে কিন্তু ৬জন ফুটবলার গোল করেছেন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এশিয়ান কাপে মোট ১১টি ম্য়াচ খেলে ভারত ৮টি গোল করেছে।
ভারতের বর্তমান দলটির রক্ষণ বেশ মজবুত হলেও ইদানিং সুনীল ছেত্রি ছাড়া জেজে, বলবন্ত-সহ কোনও স্ট্রাইকারই ফর্মে নেই। গোল করার সমস্যায় ভুগছে দল। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, এশিয়ান কাপে জালে বল জড়ানো অতীতের সেই ছয় ভারতীয় গোলদাতাকে।
|
কে আপ্পারাজু -১টি (১৯৬৪)
১৯৬৪ সালের টুর্নামেন্ট হয়েছিল ইসরাইলে (তখন এএফসির সদস্য)। অংশ নিয়েছিল মাত্র ৪টি দল। প্রথম ম্য়াচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ভারত। ম্যাচের একেবারে শুরুতে ২ মিনিটের মাথছায় ভারত এগিয়ে গিয়েছিল কে আপ্পারাজুর গোলে।
|
ইন্দর সিং - ২টি (১৯৬৪)
দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ম্য়াচেই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে (৫৭') গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন, তখন ২০ বছরের তরুণ ফুটবলার ইন্দর সিং। এর পরের ম্যাচে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ২-০ গোলে হারলেও পরের ম্যাচেই হংকংকে ভারত ৩-১ গোলে পরাজিত করে। সেই ম্য়াচেও গোল (৪৫') করে ইন্দর, ইসরাইলের মর্দেচাই স্পিয়েগলার-এর সঙ্গে টুর্নামেন্টের যুগ্ম সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন।
সুকুমার সমাজপতি - ১টি (১৯৬৪)
ব্রিটিশ কোচ হ্য়ারি রাইট-এর সেই দলে ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কিংবদন্তি ফুটবলার সুকুমার সমাজপতিও। ইন্দর প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে দেওযার পর দ্বিতীয়ার্ধে ৬০ মিনিটের মাথায় গোল করে ব্যবধান বাড়িয়েছিলেন তিনি।
সুবিমল চুনি গোস্বামী (১৯৬৪)
হংকং ম্য়াচের তৃতীয় গোলদাতা ছিলেন কলকাতার প্রাক্তন শেরিফ তথা মোহনবাগান রত্ন সুবিমল গোস্বামী যিনি বেশি পরিচিত চুনি গোস্বামী নামেই।
|
গোলকিপারের কাপ (১৯৬৪)
প্রথম অংশ গ্রহণের দুই দশক পর মূলপর্বে খেলতে ফিরেছিল সার্বিয়ান কোচ মিলোভান কিরিচ-এর ভারত। কিন্তু এই কাপ অভিযানটা ভারতের জন্য এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ কেটেছিল। গ্রুপ পর্বের ৪টি ম্য়াচ খেলে চিন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সিঙ্গাপুর-এর বিরুদ্ধে হেরেছিল ভারত। আর ইরাণের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে গ্রুপের একেবারে তলানিতে ছিল। সবচেয়ে বড় কথা গোটা টুর্নামেন্টে একটি গোলও করতে পারেনি। তবে দারণ পারফর্ম্যান্সের জোরে সেই বছর এশিয়ার অলস্টার ইলেভেনে জায়গা করে নেন ভারতীয় গোলরক্ষক তরুণ বসু।
গৌরমাঙ্গি সিং (২০১১)
২৭ বছর পর আরও এক ব্রিটিশ কোচ বব হাউটনের কোচিং-এ এশিয় সেরাদের লড়াইয়ের মূলপর্বে ফিরেছিল ভারত। এইবারেও গ্রুপের সবকটি ম্য়াচেই হেরে বিদায় নিতে হলেও ভারত ৩টি গোল করেছিল। প্রথম ম্য়াচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হার হয় ৪-০ গোলে। দ্বিতীয় ম্য়াচে বাহরিনের বিরুদ্ধে ফল ছিল ৫-২। রক্ষণের খেলোয়াড় গৌরমাঙ্গি সিং ম্য়াচের ৯ মিনিটে ভারতের পক্ষে প্রথম গোলটি করেছিলেন।
সুনীল ছেত্রি (২০১১)
বাহরিনের বিরুদ্ধে ভারতের এইবারের দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রিই দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ৫২ মিনিটে তাঁর গোলে ব্যবঘধান কমিয়েছিল ভারত। পরের ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে হারা ম্য়াচেও ১২ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে ভারতের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেছিলেন সুনীল ছেত্রি।
অর্থাত এখনও পর্যন্ত এশিয়া কাপের ইতিহাসে ভারতের পক্ষে গোল করায় ইন্দর সিং-এর সঙ্গে যুগ্মভাবে শীর্ষে রয়েছেন সুনিল ছেত্রী। মাঝে ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও সুনীলের ধার কমেনি, বরং অভিজ্ঞতা বেড়েছে। এইবারেও ভারতের আক্রমণের প্রধান ভরসা তিনিই। ভারতকে ভাল কিছু করতে গেলে সুনীলকে ইন্দর সিংকে ছাপিয়ে যেতেই হবে।