'ফিনিশার'-এর প্রত্যাবর্তন! অ্যাডিলেড ওভালে কোহলি-ধোনির যুগলবন্দি, সিরিজে ফিরল ভারতও
অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত দ্বিতীয় ওডিআই ম্য়াচের প্রতিবেদন। ভারত ম্য়াচটি ৬ উইকেটে জিতল।
মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) অ্যাডিলেডে, অস্ট্রেলিয়ার ২৯৮ রানের জবাবে তাড়া করতে নেমে ১০৪ রান করে ৪৪তম ওভারে আউট হল বিরাট কোহলি। তখনও ভারতকে জেতার জন্য শেষ ৬ ওভারে ৫৭ রান বাকি ছিল। সেখান থেকে দীনেশ কার্তিককে সঙ্গে নিয়ে আরও একটি অর্ধশতরান করে কাজ শেষ করে আসেন 'ফিনিশার ধোনি'। ৬ উইকেটে ম্য়াচ জিতে সিরিজ ১-১ করল ভারত।
ভারতের এই জয়ে সিরিজ ১-১ হল বলেই নয়, বিশ্বকাপের প্রস্তুতির নিরিখেও কিন্তু অ্যাডিলেডের এই জয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন ছিল ভূবনেশ্বর কুমারকে নিয়ে। সিডনিতে একেবারেই ছন্দে দেখা যায়নি তাঁকে। এদিন তিনি ৪৫ রানদিয়ে ৪ উইকেট তুলে তার উত্তর দিয়েছেন। প্রশ্ন ছিল ধোনির ফর্ম নিয়ে। এই ম্য়াচেই ফিনিশার ধোনিকে ফের একবার দেখা গেল।
এদিন প্রথমে ব্য়াট করে অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেটে ২৯৮ রান তোলার পর দুই ভারতীয় ওপেনার বেশ ইতিবাচক ভঙ্গিতেই রান তাড়া শুরু করেছিলেন। শিখর ধাওয়ানের ফর্মের উপরেও টিম ম্যানেজমেন্টের নজর ছিল। তাঁকে কিন্তু আজ বেশ স্বচ্ছন্দেই বাউন্ডারি মারতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু ৩২ রান করার পরই তিনি উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন। বেহেরনডর্ফের গুডলেন্থ ডেলিভারি মিড উইকেট দিয়ে ওড়াতে গিয়ে খোয়াজার হাতে ধরা পড়েন তিনি।
এরপর সাম্প্রতিক কালের অনেক ম্য়াচের মতোই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতের একদিনের দলের অধিনায়ক-সহঅধিনায়ক। কিন্তু, ১৮তম ওভারে হটাতই ছন্দপতন ঘটে। স্টইনিসের প্রথম ওভারেই তাঁকে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ওড়াতে গিয়ে হ্যান্ডসকম্বের হাতে ধরা পড়েন রোহিত (৪৩)।
ভারতের বহু প্রশ্নের উত্তর এই ম্য়াচে মিললেও নতুন করে একটি প্রশ্ন ফের উঠে পড়ল। তা হল ভারতের ৪ নম্বর। উপমহাদেশীয় উইকেটে রায়ডু নিজেকে চার নম্বরে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেও বিদেশের উইকেটে কিন্তু সিডনির পর অ্য়াডিলেডেও তাঁকে বেশ অস্বস্তিতে থাকতে দেখা গেল। শুরুতে দু-একটি খোঁচাও মারলেন। তারপর থেকে খুচরো রান নিয়ে ভালোই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ম্য়াক্সওয়েলকে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে সহজ ক্য়াচ দিয়ে ফিরলেন ৩৬ বলে ২৪ করে।
রায়ডু আউট হওয়ার সময়, ভারতের ২০ ওভারে ১৪০ রানের দরকার ছিল। ক্রিজে এসেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এর আগেপ ম্যাচে ধোনি যেমন মাঝের ওবার গুলোয় রান তোলার গতি বাড়াতে পারছিলেন না, তেমনই স্ট্রাইক রোটেটও করতে পারেননি। এদিন বিরাট রান তোলার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। অপর প্রান্তে ধোনি কিন্তু প্রচুর খুচরো রান নিয়ে তাঁকে স্ট্রাইক দিয়ে গিয়েছেন।
কেরিয়ারের ৩৯তম ওয়ানডে শতরান পাওয়ার পর কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কোহলি। শেষ পর্যন্ত ১১২ বলে ১০৪ রান করে ঝাই রিচার্ডনের বলে ম্য়াক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।
এরপর ইনিংস টানার দায়িত্ব নেন ধোনি। তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দুর্দান্ত একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন দীনেশ কার্তিক। মাত্র ১৪ বলে ২টি ৪ সহ ২৫ রান তুলে ধোনির কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন তিনি। শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল মাত্র ৭ রান। বেহেরনডর্ফের প্রথম বলেই ৬ মেরে ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীদের নস্টালজিক করে দেন ধোনি। একই সঙ্গে সিডনির পর আরও একটি অর্ধশতরানও পূর্ণ করেন। পরের বলেই ১ রান নিয়ে ম্য়াচ শেষ করেন ফিনিশার ধোনি।
তার আগে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একটি চমৎকার শতরান করেছিলেন শন মার্শও। কিন্তু এদিন তাঁর শতরান কাজে আসেনি। মহম্মদ সিরাজের অভিষেক ম্য়াচটা একেবারেই ভালো না গেলেও দারুণ ছন্দে বল করেন শামি ও ভুবনেশ্বর কুমার। দুজনে মিলে অজিদের ৭ উইকেট ফেলে দেন। নতুন বলের পাশাপাশি পুরনো বলেও সমান কার্যকর ভূমিকা নেন শামি। বলে ও ফিল্ডিংয়ে দারুণ পারফর্ম করে জাদেজাও ভারতের অলরাউন্ডার স্লটের প্রধান দাবিদার হওয়ার জোরালো দাবি জানিয়ে রাখলেন।